ইপিজেড

বাংলাদেশে কোন কোন জায়গায় ইপিজেড আছে ? বাংলাদেশের ইপিজেড সমূহ মূলত ৮ টি

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হল বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সংক্ষেপে এটি ঢাকা ইপিজেড, ডিইপিজেড বা সাভার ইপিজেড নামেও পরিচিত। এটি রাজাধানী ঢাকার নিকটে সাভারের আশুলিয়া থানায় অবস্থিত।এই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয় এবং ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এতে আরো একটি সম্প্রসারিত অঞ্চল যুক্ত করা হয়। ৩৫৬.২২ একর এলাকার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই ইপিজেডটি বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা।

এই ইপিজেডটি ঢাকা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার গণকবাড়ি এলাকায় অবস্থিত। এটি ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
কৃষি প্রধান বাংলাদেশের রপ্তানিতে বিরাট ভুমিকা পালন করে চলেছে শিল্প খাত গুলো (চা শিল্প , চামড়া শিল্প, ঔষধ শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প, পোশাক শিল্প ইত্যাদি উল্লেখ)।

তবে বাংলদেশের রপ্তানী আয় বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌছানোর পেছনে প্রধান খাত হল তৈরি পোশাক শিল্প। বর্তমানে বাংলাদেশে বিশেষ কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) যেখানে শিল্প কর্তৃপক্ষের কোনরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই পণ্য অবতরণ, বহন, উৎপাদন বা পুনঃসংযোজন ও পুনঃরপ্তানি করা হয়। যেমন সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, জাতীয় সীমান্ত প্রভৃতি এলাকায় গড়ে তোলা হয়। আজকে আমাদের আলোচনা র মুখখ বিষয়টি হচ্ছে এই (ইপিজেড),

চলুন তাহলে এক নজরে দেখে আসা যাক বাংলাদেশের ইপিজেড সমূহঃ

বাংলাদেশের ইপিজেড সমূহ মূলত ৮ টি। এগুলো হলোঃ-
১. আদমজী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
২. ঈশ্বরদী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৩. উত্তরা প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৪. কর্ণফুলী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৫. কুমিল্লা প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৬. চট্টগ্রাম প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৭. ঢাকা প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল,
৮. মংলা প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল।

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলঃ-

অবস্থানঃ ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হল বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সংক্ষেপে এটি ঢাকা ইপিজেড, ডিইপিজেড বা সাভার ইপিজেড নামেও পরিচিত। এটি রাজাধানী ঢাকার নিকটে সাভারের আশুলিয়া থানায় অবস্থিত।এই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয় এবং ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে এতে আরো একটি সম্প্রসারিত অঞ্চল যুক্ত করা হয়। ৩৫৬.২২ একর এলাকার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই ইপিজেডটি বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা।

শিল্প প্রতিষ্ঠানঃ এখানে কলকারখানাগুলোতে তিন ধরনের বিনিয়োগ আছে:

১.শতভাগ বিদেশী পুজিঁ,
২.বিদেশী ও দেশী পুজিঁর যৌথ বিনিয়োগ এবং শতভাগ দেশীয় পুজিঁ,
৩.এই ইপিজেডে সর্বমোট শিল্প-প্লটের সংখ্যা ৪৫১ টি।

বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের তালিকা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল হচ্ছে এমন একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল যেখানে শুল্ক কর্তৃপক্ষের কোনরূপ হস্তক্ষেপ ছাড়াই পণ্য অবতরণ, বহন, উৎপাদন বা পুন:সংযোজন ও পুন:রপ্তানি করা যায়। এই অঞ্চলগুলো সাধারণত বাণিজ্যের জন্য ভৌগলিকভাবে সুবিধাজনক স্থান, যেমন: সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, জাতীয় সীমান্ত – প্রভৃতি এলাকায় গড়ে তোলা হয়।এটি এমন একটি এলাকা যেখানে কয়েকটি দেশ আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য বাধাসমূহ কমাতে বা দূর করতে সম্মত হয়েছে।

তালিকা অঞ্চলের নাম

(সংক্ষিপ্ত নাম) অবস্থান প্রতিষ্ঠাকাল মোট আয়তন
(একর) শিল্প প্লটের সংখ্যা বার্ষিক রপ্তানি
(মিলিয়ন US$)
আদমজী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(আদমজী ইপিজেড /
নারায়ণগঞ্জ ইপিজেড) আদমজী নগর, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ২০০৬ ২৪৫.১২ ২২৯ টি ১৫৯৯.৩২
ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(ঈশ্বরদী ইপিজেড /
পাবনা ইপিজেড) পাকশী, ঈশ্বরদী, পাবনা ২০০১ ৩০৯ ২৯০ টি ৩২০.৬২
উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(উত্তরা ইপিজেড /
নীলফামারী ইপিজেড) সোনারায়, নীলফামারী ২০০১ ২১৩.৬৬ ১৮০ টি ১৪৪.৯৮
কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(কর্ণফুলী ইপিজেড /
কেইপিজেড) স্টীল মিল কলোনী, উত্তর পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম ২০০৬ ২০৯.০৬ ২৫৫ টি ১৯৬৫.৬৭
কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(কুমিল্লা ইপিজেড) পুরাতন বিমানবন্দর এলাকা, কুমিল্লা ২০০০ ২৬৭.৪৬ একর ২৩৮ টি ১৩২৪.৫৯
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(চট্টগ্রাম ইপিজেড /
সিইপিজেড) দক্ষিণ হালিশহর, চট্টগ্রাম ১৯৮৩ ৪৫৩ একর ৫০১ টি ২১৩২৭.৯১৪৬৮
ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(ঢাকা ইপিজেড /
ডিইপিজেড /
সাভার ইপিজেড) গণকবাড়ী, আশুলিয়া থানা, সাভার, ঢাকা ১৯৯৩ ৩৫৬.২২ ৪৫১ টি ১৭৯৪১.৬০
মংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
(মংলা ইপিজেড /
খুলনা ইপিজেড) মংলা বন্দর এলাকা, বাগেরহাট ১৯৯৯ ২৫৫.৪১ ১৯০ ৩৫০.২৯

পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা যারা বিনিয়োগ করতে চাই, তারা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী। কারণ এখানে শিল্প কারখানা গড়ে তুললে পণ্য লোকাল মার্কেটেও তোলা যায়, যে সুযোগটা ইপিজেডে নেই। তাই ইপিজেডগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত করে দেওয়া হলে, তা যুগোপযোগী ও ব্যবসাবান্ধব পদক্ষেপ হবে।’

ইপিজেড স্থাপনে সরকারের অবস্থান বিষয়ে জানতে চাইলে বেপজার মহাব্যবস্থাপক নাজমা বিনতে আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সরকার হয়তো নতুন করে আর কোনও ইপিজেড নির্মাণের অনুমতি দেবে না। ইপিজেড হিসেবে যেগুলো কাজ করছে, সেগুলোকে হয়তো অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় ইপিজেড চট্টগামের মিরসরাই ইপিজেডকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকার আর ইপিজেড প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী না। কারণ ইপিজেড এলাকায় স্থাপিত কারখানায় উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যায় না। এগুলো রফতানি করতে হয়। অপরদিকে অর্থনেতিক অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত কারখানায় উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় মার্কেটসহ বিদেশেও রফতানি করা যায়। যেটা ব্যবসায়ীদের জন্য বেশি লাভজনক। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারী শিল্প মালিকরা তাদের মুনাফার টাকার পুরোটা নিজ দেশে নিয়ে যেতে পারবেন। দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে সরকার এমন সুবিধা দিয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *