গাজর খাওয়ার উপকারিতা ২০২২?
আসসালামুয়ালাইকুম সম্মানিত ভিজিটর ভাইওবোনের আশা করি আপনারা ভালো আছেন।
আজকে আমি যে পোস্টটি আপনাদের উপহার দিতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে গাজরে কতটুকু ভিটামিন আছে একটা মানুষ গাজর খেলে কি হয়। গাজর শীতকালে খেলে ভিটামিন বেশি হয় না গরমকালে খেলে ভিটামিন বেশি হয়।
গাজরের ইংরেজি নাম ‘ক্যারট’। গ্রিক শব্দ ক্যারট-অন থেকে এই ক্যারট শব্দের উৎপত্তি। আমরা যত রকমের সবজি খাই, তার মধ্যে দ্বিতীয় জনপ্রিয় সবজি গাজর। এর ১০০টি প্রজাতি রয়েছে। গাজর সাধারণত পাঁচটি বর্ণের হয়ে থাকে—সাদা, কমলা, বেগুনি, হলুদ ও লাল। গাজর বিটা ক্যারোটিনের প্রধান উৎস।
গাজর কাঁচা খাওয়া ভালো। তবে রান্না করে খাওয়া আরো ভালো। যদি গাজর রান্না করা বা কাটা হয়, তখন এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে আরো বেশি কাজ করে।
রান্না করা গাজরের মধ্যে ক্যারোটিনোয়েডস থাকে। ক্যারোটিনোয়েড যেহেতু চর্বিতে দ্রবণীয় উপাদান, তাই এটি তেল-চর্বি দিয়ে রান্না করে খেলে দেহের রক্তে ক্যারোটিনোয়েডের শোষণ এক হাজার শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গাজরে উচ্চ পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন পাওয়া যায়। এটি লিভারে গিয়ে ভিটামিন-এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
গাজর ক্যানসার প্রতিরোধক। গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর ফুসফুস ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্রের (কোলন) ক্যানসার রোধ করে।
গাজরের মধ্যে থাকা বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে কোষ নষ্ট হয়। এটি কোষের ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-এ ব্রণ হওয়া এবং চামড়া ঝুলে পড়া রোধ করে।
গাজর হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, ও লিউটিন দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে সলিউবল ফাইবার থাকে। দুটি একসঙ্গে মিলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
বডির টক্সিক বা বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। দেহে চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর মধ্যে থাকা মিনারেলগুলো দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলোর কাজে বাধা দেয়।
ব্রণ কমাতে গাজর যেভাবে সাহায্য করে
ত্বকের সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা হলো ব্রণ। জীবনযাপনে নিয়মহীনতা, মানসিক চাপ, অনিদ্রা, অপুষ্টি, দূষণ- এমন আরও অনেক কারণই ব্রণের জন্য দায়ী। ব্রণ থেকে চুলকানি, দাগ এসব তো আছেই! ব্রণের সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নানাজন নানাকিছু ব্যবহার করেন। কিন্তু বাজার থেকে কেনা কেমিক্যালযুক্ত পণ্য বেশিরভাগ সময়ে উপকারের বদলে অপকার ডেকে আনে।
Advertisement
বোল্ডস্কাই প্রকাশ করেছে এমন একটি ঘরোয়া প্রতিকারের কথা বলব, যা ব্যবহার করলে আপনি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মু্ক্তি পাওয়া সম্ভব। সেটি হলো গাজরের রস। গাজরের জুস ভিটামিন এ এবং সি-এর সমৃদ্ধ উৎস। ভিটামিন এ হল প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এটি ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে, পাশাপাশি ব্রণ কমাতেও সহায়তা করে।
গাজরের জুসের মাস্ক ত্বককে রক্ষা করতে এবং ব্রণ দূর করতে গাজরের রস সরাসরি মুখে লাগাতে পারেন। প্রথমে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন। এরপর গাজরের রসে কটন প্যাড ভালেভাবে ডুবিয়ে এটি পুরো মুখে লাগান। পুরোপুরি না শুকোনো পর্যন্ত মুখে রেখে দিন। এরপর ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কাঙ্ক্ষিত ফলের জন্য প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন।
গাজরের জুস এবং সি সল্ট১ টেবিল চামচ গাজরের রস ও ১ চা চামচ সি সল্ট নিয়ে ভালোভাবে মেশান। কটন প্যাড ব্যবহার করে আক্রান্ত জায়গায় মিশ্রণটি লাগান। কিছুক্ষণ আলতো করে মুখ ম্যাসাজ করুন। পুরোপুরি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এটি আপনার মুখে রেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। একদিন পরপর এটি ব্যবহার করুন।
Advertisemen।।
গাজরের জুস এবং অলিভ অয়েল২ টেবিল চামচ গাজরের রস ও ১ চা চামচ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর কটন প্যাড ব্যবহার করে আক্রান্ত স্থানে মিশ্রণটি প্রয়োগ করুন। ১৫ মিনিট রেখে তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রতিকারটি সপ্তাহে একবার করুন।
গাজরের জুস এবং মুলতানি মাটিএকটি গাজরের রস ও পরিমাণমতো মুলতানি মাটির গুঁড়া একসঙ্গে ভালোভাবে মেশান। এবার এই পেস্টটি আপনার মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।