তথ্য-প্রযুক্তি

জমির রেকর্ড সংশোধন কিভাবে করা যায়

জমির রেকর্ড সংশোধন কিভাবে করা যায় ২০২২ এই বিষয়ে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে। আপনার জন্য জমি রেকর্ড সংশোধন করতে চান কিংবা কিভাবে করবেন সমস্ত বিষয় জানতে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ চলছে। খতিয়ান কিংবা পর্চা রেকর্ড কার নামে থাকলেই সে জমির মালিক হবে এমনটা কিন্তু নয়।

S.A রেকর্ড সংশোধন,C.S রেকর্ড সংশোধন,B.S রেকর্ড সংশোধন, R.S রেকর্ড সংশোধন, City জরিপ সংশোধন এ যদি কোন ভুল পরিলক্ষিত হয় কিংবা কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল রেকর্ড তৈরি করে নেয় তবে তা কিভাবে সংশোধন করবেন সে বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। ২০-২৫ বছর পর পর ভূমি জরিপের মাধ্যমে এসব রেকর্ড তৈরি করা হয় আরে গুলোতে যদি কোন রকম ভুল পরিলক্ষিত হয় তাহলে তার সংশোধন করা যাবে।

জমির রেকর্ড সংশোধন কিভাবে করা যায়

ভূমি রেকর্ড কি? 

জমির রেকর্ড সংশোধন কিভাবে করা যায়

ভূমি রেকর্ড কি এ বিষয়ে অনেকেই অবগত নন। সরেজমিনে জরিপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভূমি রেকর্ড তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়। আপনারা জেনে থাকবেন যে, খসড়া গ্রাম (মৌজা) মানচিত্রই হলো ভূমি রেকর্ডের ভিত্তি। এই মৌজা ম্যাপ বা মানচিত্র প্রণয়নকে কিশ্তওয়ার বলা হয়।

এই মানচিত্র সাধারণত ১৬ ইঞ্চি = ১ মাইল স্কেলে প্রণয়ন করা হয়। প্রথমে রেকর্ড তৈরির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় প্রকৃত অবস্থা দেখিয়ে প্লটের পর প্লট ভিত্তিতে। একে খানাপুরি বলা হয়। এতে জমির মালিকানা, আয়তন, জমির শ্রেণী, মালিকানায় অংশীদারির বিবরণ ও অবস্থা লিপিবদ্ধ থাকে। আর এগুলি খসড়া নামে একটি তালিকার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

জমির রেকর্ড সংশোধন কিভাবে করা যায়

রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধন করার নিয়ম ২০২২

ভূমি মন্ত্রনালয়ের ‘আইন শাখা-০১’ এর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ তারিখের নং- ৩১.০০.০০০০.০৪২.৬৭.০৩১.১১.৮৪১ স্মারকে প্রচারিত ‘পরিপত্রে’ চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য ৩ ধরনের কর্তৃপক্ষের কথা বলা হয়েছে- সহকারী কমিশনার (ভুমি) কর্তৃক বিবেচনাযোগ্য করনিক ভুলের মধ্যে নামের ভুল, অংশ বসানোর হিসেবে ভুল, দাগসুচিতে ভুল, ম্যাপের সংঙ্গে রেকর্ডের ভুল, জরিপকালে পিতার মৃত্যুর কারনে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড হবার কথা থাকলেও জরিপকারকদের ভুল বা অজ্ঞাত কারনে তা মুল প্রজা বা পিতার নামে রেকর্ড হওয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

  • একইভাবে প্রতারনামূলক লিখনের (Fraudulent Entry) মাধ্যমে সৃষ্ট চুড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ড সংশোধনের জন্য প্রাপ্ত আবেদন অথবা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্ব কর্মকর্তা প্রজাস্বত্ত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫ এর বিধি ২৩ এর উপবিধি (৪) অনুযায়ী রেকর্ড সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন

 

  • ২। The State Acquisition and Tenancy Act, 1950 এর ১৪৯ ধারার (৪) উপধারা মতে, Board of Land Administration যে কোন সময় যে কোন খতিয়ানে বা চুড়ান্তভাবে প্রকাশিত সেটেলমেন্ট রেন্ট-রোলে অন্তরভুক্ত যথার্থ ভুল (Bonafide Mistake) সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন। কিন্তু Board of Land Administration বর্তমানে বিলুপ্ত বিধায় এ ক্ষমতা সরকারের পাশাপাশি ভূমি আপিল বোর্ডের রয়েছে।

 

  • ৩। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ জরিপে প্রকাশিত খতিয়ানের বিষয়ে যে কোন আদেশ প্রদানে এখতিয়ারবান। জরিপ পরবর্তী স্বত্বলিপি গেজেটে চুড়ান্ত প্রকাশনার পর কোন সংশোধনীর দাবী থাকলে তা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচার্য” অর্থাৎ আপনার খতিয়ানে যে কোন ধরনের ভুল হোক না কেন, ভুলের ধরন অনুসারে উপরিউক্ত তিন ভাবেই তা সংশোধন সম্ভব।

নিজের নামে জমি রেকর্ড করার নিয়ম ২০২২

নিজের নামে কিভাবে জমি রেকর্ড করবেন সে বিষয়ে এ পর্যায়ে আলোচনা করা হবে। সরকারি ভূমি অফিসে দেশের, গ্রামের নির্দিষ্ট এলাকার মোট জমির পরিমাণ আপনারা ম্যাপের মাধ্যমে দেখতে পারবেন।মানচিত্রের মাধ্যমে দেশের মোট জমির পরিমাণ মোটামুটি ভাবে বলা যায়। সার্চ করলে জমির মালিকানা অতীতে কার নামে ছিল এবং জমি  হাত বদল করলে  সে মানচিত্রটি দেখা যায়। ভূমি ও জমি সংস্কার আইনে রেকর্ড অফ রাইটের তৈরির পদ্ধতির কথা বলা আছে।

এই পদ্ধতি হল: (১) ট্রাবার্স সার্ভে (২) ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (৩) খানাপুরী (৪) বুঝারত (৫) তসদিক (৬) খসড়া আয়.ও.আর প্রস্তুতি (৭) অভিযোগ সংক্রান্ত নিষ্পত্তি (৮) ফাইনাল রেকর্ড প্রভৃতি ও তার প্রকাশনা। সাধারণ লোকের জন্য ট্রাভার্স সার্ভে ও ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে প্রয়োজন না হলেও সরকারি ক্ষেত্রে এই দু’রকম সার্ভেরই প্রয়োজন হয়।

সরকারি রেকর্ড অফ রাইটসে জমির পরিমাণ যা দেখানো আছে খতিয়ানের হোক কিংবা দাগ নম্বরেই হোক সেই জমির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য নির্বাচিত সময় অনুযায়ি জরিপ করানো প্রয়োজন, যাতে জমি ক্রয় করার পর জমির পরিমাণ ও সীমা রেখা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে বিবাদ না হয়। জমির দাগ তিন কোণ বা চার কোণের হতে পারে।

এই রেকর্ড অফ রাইটসকে সরকারি দলিল হিসাবে গণ্য করতে হবে। রেকর্ড অব রাইটস এর সার্টিফায়েড কপিকে পর্চা বলে। এই পর্চাকেই বাংলায় বলা যেতে পারে স্বত্বলিপি। মূল দলিল বিনষ্ট হলেও এর সার্টিফায়েড কপি যথাস্থানে দাখিলা করা যেতে পারে। এই সার্টিফায়েড কপি আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য। সুরক্ষা ও নিয়ম অনুযায়ি প্রত্যেক জমির মালিককেই তার জমি রেকর্ড অফ রাইটস নথিভূক্ত করা আবশ্যক।

জমির খতিয়ান সংশোধন করতে কি কি কাগজ লাগবে ২০২২

  • যে জমির রেকর্ড সংশোধন করতে চান সেই জমির মালিকানার সকল দলিলপত্র (যেমন মূল দলিলের সার্টিফাইড কপি, বায়া দলিল, পূর্বের খতিয়ানের কপি ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।)
  • চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত ভূল রেকর্ডের সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা আইডি কার্ডের ফটোকপি।

আরো পড়ুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *