গলায় ব্যথা হলেই আমরা বলে দিই, তোমার তো টনসিল হয়েছে। তো এই টনসিলটা কী? টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থার একটা অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিঙ্গুয়াল,প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড।
এই টনসিলগুলোর কোনো একটির প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাইটিস। ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাক, কান, গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের প্রধান খবিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টনসিল বলতে আমরা সচরাচর যা বুঝি, তা কিন্তু আসলে টনসিলাইটিস। টনসিলাইটিস যে শুধু শিশুদের হয়, তা নয়। এটা শিশুদের বেশি হলেও যেকোনো বয়সেই হতে পারে।
আর প্যালাটাইন টনসিলই সবচেয়ে বেশি প্রদাহ সৃষ্টি করে, ফলে গলা ব্যথা হয়।এই প্রদাহ সাধারণত দুই ধরনের হয়। একটি তীব্র বা অ্যাকিউট। আর অন্যটি দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক টনসিলাইটিস।
আরও দেখুন
Razuaman.com
Ibn Sina Uttara Doctor List & Contact
ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, উত্তরা।
জন্ডিস হবে দূর, লিভারও হবে শক্তিশালী, ৫টি পাতা চিবিয়ে খেলেই
নীলফামারী জেলার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের তালিকা।
PG Hospital Dhaka Doctor List & Contact Address & Contact
Sarkari Karmachari Hospital Location Phone, Fulbaria, Dhaka
নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রংপুর | ENT specialist doctor in RangpurRangpur।
Popular Hospital Dhanmondi Dhaka Doctors List পপুলার হাসপাতাল ধানমন্ডি ডাক্তার তালিকা
National Heart Foundation Hospital & Research InstituteInstitute
ঢাকার সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা LIST OF SURGERY DOCTORS
Best Doctors and Top Surgeons in Kolkata
রোগের লক্ষণ
তীব্র গলাব্যথা।
মাথাব্যথা, উচ্চ তাপমাত্রা।
খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়।
কানে ব্যথা হতে পারে।
মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।
মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।
lস্বরভঙ্গ, গলায় ঘাসহ টনসিল স্ফীতি, ঢোঁক গিলতে কষ্ট হয়, গলা ফুলে যাওয়া।কারণ: পুষ্টির অভাব, আইসক্রিম, ফ্রিজে রাখা শীতল পানি বেশি পান করা টনসিলের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে স্থানে বাস করলে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে শীতের প্রকোপ বেশি হলে, রোদ থেকে এসে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে, গরমে ঘাম বসে গেলে টনসিলের প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা: প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে যত দিন সুস্থ না হবে। মুখের হাইজিন (মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য) বা ওরাল হাইজিন ঠিক রাখতে হবে। এটাকে মাউথ ওয়াশ বলা হয়, যা দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে। সাধারণ স্যালাইন বা লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে। লেবু বা আদা চাও খেতে পারেন। গলায় ঠান্ডা লাগানো যাবে না। যেহেতু তীব্র ব্যথা থাকে এবং জ্বর থাকে, সে ক্ষেত্রে জ্বরের ওষুধসহ কিছু ওষুধ দেওয়া হয় এবং এটা ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে। ওষুধ নিয়মিত খেলে ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে যায় এবং রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
দীর্ঘমেয়াদি টনসিলাইটিসের চিকিৎসা সাধারণত অস্ত্রোপচার। যদি বারবার টনসিলাইটিস হয় বা এর জন্য অন্য কোনো জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে টনসিল কেটে বা অস্ত্রোপচার করে ফেলাই ভালো।
কী কী কারণে টনসিলের অস্ত্রোপচার করা দরকার?
দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক টনসিলাইটিস
টনসিল বয় হয়ে শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে গেলে এবং নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হলে।
টনসিলে যদি ফোঁড়া হয়, অর্থাৎ ইনফেকশন হলে।
যদি বছরে চার-পাঁচবারের বেশি টনসিল ইনফেকশন হয়।
এসব কারণ ছাড়াও যদি দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ক্রিপটোকঙ্কাল ইনফেকশন হয়
কখন অস্ত্রোপচার করা যাবে না
অ্যাকিউট ইনফেকশন থাকলে টনসিলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। কারণ, তখন ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং রক্তপাত বন্ধ না-ও হতে পারে।
জ্বর বা ব্যথা থাকা অবস্থায় করা যাবে না।
যদি কারও রক্তরোগ থাকে, যেমন থ্যালাসেমিয়া। রক্তনালি এবং রক্তরোগ থাকলে টনসিলে অস্ত্রোচার করা যাবে না।এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ থাকলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে যদি করতেই হয়, তাকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এনে অস্ত্রোপচার করতে হবে।
ডায়াবেটিস থাকলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। অস্ত্রোপচারের আগে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেআনতে হবে।
কিছু ভুল ধারণা
টনসিল ফেলে দিলে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, এটা ঠিক নয়। কারণ, টনসিল হলো প্রথম পাহারাদার। এর পরও গলায় ৩০০-এর বেশি লালাগ্রন্থি বা গ্ল্যান্ড আছে, যেগুলো রোগ প্রতিরোধ করে। অনেক সমীক্ষায় দেখা গেছে, টনসিলে অস্ত্রোপচার করার আগে ও পরে রোগপ্রতিরোধে কোনো তারতম্য হয় না।
অনেক সময় গলার বাইরের দিকে দুই পাশে বরই বিচির মতো দুটি দানা ফুলে উঠতেও দেখা যায়, অনেকে এগুলোকে টনসিল মনে করলেও এরা কিন্তু টনসিল নয়। রোগী বড় করে মুখ হাঁ করলে ভেতরের দিকে যে দুটি বড় দানার মতো দেখা যায়, তা-ই হলো টনসিলাইটিসে আক্রান্ত টনসিল।
টনসিলে ইনফেকশন হলে করণীয়
টনসিলে ইনফেকশন সব বয়সী মানুষের হতে পারে। বিশেষ শীত ও বৃষ্টির দিনে এই রোগ বেড়ে যায়। ঘনঘন গলাব্যথা, জ্বর, খাবার খেতে অনীহা টনসিলে ইনফেকশনের অন্যতম লক্ষণ। খাবার ঠিক মত গিলতে না পারায় এ সময় খাওয়া বন্ধ করে দেয় অনেক রোগী। ফলে পানিশূন্যতা ও ক্যালরির অভাব দেখা দেয়।
টনসিল কি?
টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটা অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড। এই টনসিলগুলোর কোনো একটির প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাইটিস।
টনসিলের কাজ
এর প্রধান কাজ জন্মের পূর্বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করা। টনসিনের সমস্যা হলে রোগী ঘনঘন সর্দিকাশিতে ভোগে এবং টনসিল ও এডেনায়ড বড় হয়ে যায়।
সুস্থ ব্যক্তি যাদের ঘনঘন সর্দিকাশি হয় না কিংবা টনসিলে ইনফেকশন হয় না; তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টনসিল ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে যায় ও একসময় এ অঙ্গ অকার্যকর হয়ে পড়ে।
টনসিল ইনফেকশনের উপসর্গ
১. ঘনঘন গলাব্যথা ও সঙ্গে জ্বর। সাধারণত গলাব্যথার সঙ্গে জ্বর থাকে, যা অনেক সময় ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে।
গলাব্যথার কারণে শিশু খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় শিশুর দেহে পানিশূন্যতা ও ক্যালোরির অভাব দেখা দিতে পারে।
২. ঘনঘন টনসিলে ইনফেকশন হলে এটি আকারে বড় হয়ে যায় এবং শ্বাসের রাস্তা ও খাদ্য গ্রহণের পথ বাধাগ্রস্ত হয়।
৩. অনেকে ঘুমানোর সঙ্গে সঙ্গে নাক ডাকতে শুরু করে। নাক ডাকা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শ্বাসের রাস্তা ক্রমাগত ছোট হতে হতে যখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়; তখন শ্বাস নেয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাখে। এ পর্যায়ে শরীরের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
৪. শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমতে থাকে এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই শরীর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে উপনীত হবে। এ সময়ে শরীরের ভেতরের জীবন বাঁচানোর প্রক্রিয়াগুলো (রিরিক্স মেকানিজম) সক্রিয় হয়ে ওঠে।
৫. এডেনয়েড গ্রন্থি বড় হলে ঘনঘন সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডায় ভোগে এবং ঠাণ্ডা সহজে সারতে চায় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট এবং রাতের বেলায় কাশিতে ভোগে।
৬. গলা বা নাকের প্রদাহ কানের ভেতর চলে যায়। ফলে কানের মধ্যে ঘনঘন ব্যথা হয় এবং কানে কম শোনে। অনেক সময় ব্যথা ছাড়াও কানের মধ্যে পুঁজ বা পানি জমতে পারে।
৭. কানের ভেতর ঘনঘন ইনফেকশন বা কানের ভেতর লম্বা সময় পুঁজ পানি জমা থাকার ফলে কানের পর্দাগুলো ক্ষতিসাধিত হয় এবং একসময় পর্দা সম্পূর্ণরূপে ছিদ্র হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কান পাকা রোগ এবং শ্রবণের সমস্যা এভাবে শুরু হয়ে থাকে।
৮. টনসিলে ঘনঘন ইনফেকশন থেকে বাতজ্বর (রিউম্যাটিক ফিভার) হতে পরে। এ রোগের ফলে হার্টের এবং কিডনির মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হতে পারে। অল্প বয়সে হার্টের বাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়া বা কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার (কিডনি ফেইলিওরের) অন্যতম প্রধান কারণ বাতজ্বর, যা টনসিলে ইনফেকশন থেকেই হয়ে থাকে।
কী করবেন
এসব উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।