ডাবের পানি পান করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকলে আরো বেশি কার্যকর ফল পাওয়া যায়। দিনে যে কোনো সময় ডাবের তাজা পানি পান করলে ভালো বোধ করবেন আপনি। তবে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এ পানি পান করলে স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিগুণ ফল বয়ে আনবে। আসুন ডাবের পানি পানের উৎকৃষ্ট সময় সম্পর্কে জেনে নিই-
ডাবের পানির উপকারিতার কথা কমবেশি সবারই জানা। শরীর সুস্থ রাখতে ডাবের পানির তুলনা নেই। ত্বকের সমস্যাতেও ডাবের পানি লাগানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডাবের পানি শিশুদের জন্যও দারুণ উপকারী। এতে মোনোলৌরিন নামের এক ধরনের যৌগ থাকার কারণে এটি শিশুদের নানা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি শিশুদের ঠান্ডা ও ফ্লু থেকে বাঁচায়। সেই সঙ্গে সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ডাবের পানিতে সোডিয়াম, কোলেস্টেরল, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার পর ডাবের পানি খাওয়ানো যায়। কঠিন খাবার খাওয়া শুরুর সময় তারা ডাবের পানিও সহজে হজম করতে পারে। শিশুদের ডাবের পানি খাওয়ালে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-
১. পেটের নানা সমস্যা, যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা, আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে ডাবের পানি।
২. এটি শিশুদের অন্ত্রের কীট নির্মূল করে।
৩. মূত্রনালির সংক্রমণ কমায়।
৪. বদহজম ও ডায়রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া তরল প্রতিরোধ করতে সক্ষম এ পানি।
৫. অতিরিক্ত গরমে শিশুদের পানিশূন্যতা দূর করে ডাবের পানি।
ওজন কমায়
এক গ্লাস ডাবের পানি খাওয়ার অনেকক্ষণ পরও মনে হবে, ক্ষুধা লাগছে না। তাই যাদের ঘন ঘন খেতে হয় এবং বেশি খাওয়ার কারণে ওজন বেড়ে যায় তারা নিয়ম করে ডাবের পানি খেতে পারেন। তাছাড়া ডাবের পানিতে ফ্যাট থাকে কম। ফলে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্য ডাবের পানি খুবই উপকারী।
সাইক্লিস্ট?
আপনি যদি হন একজন সাইক্লিস্ট; তবে সাইকেল চালানোর পর শরীরে পানির চাহিদা পুরোপুরি মেটাবে ডাবের পানি। শরীরের মিনারেল ও ভিটামিনের অভাব তাৎক্ষণিক মেটায় ডাবের পানি।
ত্বক সুন্দর করে
ক্রিম, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, লোশন ইত্যাদি তৈরিতে ডাবের পানির ব্যবহার থেকেই বোঝা যায় ত্বক সুন্দর রাখতে এটি অনেক কার্যকরী। ব্রণ, মেছতা বা ত্বকের অন্য কোনো দাগ দূর করে মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করতে এটি সাহায্য করে।
কিডনীতে পাথরের চিকিৎসায়
যাদের কিডনিতে পাথর আছে, তাদের জন্য ডাবের পানি খুবই উপকারী। এর টক্সিন কিডনির পাথরকে গুড়ো করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি রক্ত প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তনালী পরিষ্কার রাখে।
হজম ক্রিয়া দ্রুততর করে
গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যার কারণে হজমে প্রায় ব্যাঘাত ঘটে। ডাবের পানি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। সপ্তাহে অন্তত একদিন ডাবের পানি পান করলে আগের চেয়ে নিজেকে কর্মদক্ষ ও প্রাণবন্ত অনুভব করবেন।
হঠাৎ মাথাব্যথা
অনেক সময় ক্লান্তি বা অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। ডাবের পানি এ ধরনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমায়। হঠাৎ শুরু হওয়া মাথাব্যথা থেকে দেয় ঝটপট মুক্তি। সূত্র: বোল্ড স্কাই
এনার্জি ড্রিংকের চেয়ে ভাল
কঠোর অনুশীলন কিংবা পরিশ্রমের কারণে আমাদের শরীর থেকে অনেক খনিজ-সমৃদ্ধ তরল বেরিয়ে যায়। সেটা পূরণে অনেকেই এনার্জি ড্রিংক পান করে থাকি। কিন্তু তা না করে এক গ্লাস ডাবের পানি বেশি উপকারী। কারণ এতে গ্লুকোজের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ও চিনি রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডাবের পানিতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধের যাদুকরী ক্ষমতা। ডাবের পানি আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এছড়া এটি আমাদেরকে ঠাণ্ডা, কাশি থেকেও দূরে রাখে। এমনকি শীতের মৌসুমেও ডাবের পানি আমাদেরকে সুস্থ রাখে।
কর্মশক্তি বৃদ্ধি পায়
ডাবের পানিতে আছে শরীরের জন্য উপকারী পাঁচটি উপাদান: ক্যালসিয়া, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। প্রতিদিন ডাবের পানি খান, তাহলে নিজের মধ্যে অসীম প্রাণশক্তি খুঁজে পাবেন, যা আগে অনুভব করেননি।