পরীমনি আসলে কে !

পরীমনি শিল্পী। যিনি শিল্পকে নিজের মধ্যে ধারণ করবেন, বহন করবেন এবং শিল্পভোক্তার কাছে পৌঁছে দেবেন। শিল্পীজীবন ব্যক্তিজীবনকে গুম করে দেয়। শিল্পী জীবনে ভান অন্যায্য। পরীমনি যা- সে তা গোপন করে না। কিন্তু সমাজে ভান অপরিহার্য। পরীমনি চূড়ান্ত পর্যায়ের একজন বোকাও বটে! সেজন্য তার গায়ে আপনাদের ছিটিয়ে দেওয়া থু থু লেগে আছে। কিন্তু সে থু থু মুছতে নারাজ।
ব্যক্তি পরীমনি আসলে কে? সে হয়তো নিজেও নিজেকে মাঝেমধ্যে খুঁজে পায় না। পরীমনিকে যখন এতিমখানার শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায়, তার মুখ, মুখের ছবি আর আচরণের মায়া- সব মিলিয়ে কবি ওমর আলীর কবিতার ঠিকঠাক সংমিশ্রণ যেন!
চোখের খাদ্য হিসেবে পরীমনিকে অনেকে গ্রহণ করেন। গ্রহণ করা শেষে জনসম্মুখে তার দিকে শুধু আক্ষরিক অর্থে থু থু ছিটিয়ে চলে আসেন। এতে পরীমনি নিশ্চয় ব্যথিত হন। নিজেকে হারিয়ে ফেলে তারপর আবার নিজেকে ফিরে পেতে চান। হ্যাঁ, ফিরে পেতে চান বলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় এতিমখানায়। এতিম শিশুদের হাতের খাবার অনায়াশে খেয়ে নেন তিনি।
সমাজের চিত্র বলতে গেলে বলতে হবে- যারা হাত দিয়ে ছুঁতে পারেন না পরীমনিকে, তারা চোখ দিয়ে ছুঁয়ে দেখেন। আসলে খুবলে দেন। পরীমনির শরীরে অদৃশ্য ক্ষত তৈরি হয়। একজন রক্তাক্ত পরীমনি আর লাল আলো মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়।
পুনরাবৃত্তি হয় সময়ের। ঘটনার পরম্পরা হিসেবে হলিউড অভিনেত্রী মনরোর অস্থির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আলোচনা করা যেতে পারে। তিনি আসক্তি, হতাশা এবং উদ্বেগের সঙ্গে জীবন যাপন করেছিলেন। বিবাহের গুঞ্জনের জন্য আলোচিত ছিলেন। এবং পরপর দুবার বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে সমালোচিতও হয়েছিলেন।
১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট, লস অ্যাঞ্জেলেসে তার বাড়িতে বার্বিটুয়েট্রেট অতিরিক্ত সেবনের কারণে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান মনরো। প্রাথমিকভাবে তার মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ আত্মহত্যা হিসেবে রায় দেওয়া হয়েছিল, যদিও মনরোর মৃত্যুপরবর্তী দশকগুলিতে অনেকবার খবরে এসেছে- মনরো আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মনে পড়ে যেতে পারে বিজয়লক্ষ্মী ভদলাপতি যিনি ‘সিল্ক’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আলোচিত হয়ে আছেন তার কথা। দক্ষিণ ভারতীয় ছবির এ অভিনেত্রী নিজের গণ্ডি ছাড়িয়ে ১৯৮০-এর দশকে সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত আবেদনময়ী অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন। এক অস্থির জীবন যাপন করেছিলেন এ নায়িকা। এক সময় তার মৃতদেহ আবিষ্কার হয়েছিল চেন্নাইয়ের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে।
বিজয়লক্ষ্মী ভদলাপতি চরিত্রটি চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তুলেছিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী ‘বিদ্যা বালান’। সিনেমার শেষে দর্শকের সামনে যে প্রশ্নটি আব্রাহামের বর্ণনার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছিল তা হলো: সিল্ক যে জীবন চালিত করে এসেছেন তা ঠিক ছিল নাকি ভুল?
উত্তর দেবেন দর্শক।
সন্ধ্যায় বোর্ডি পাস নিয়ে পরীমনির ককপিটে আসেন অতিথিরা। ছেলেদের পরনে ছিল সাদা আর মেয়েরা পরেছিল লাল রঙের পোশাক। পুরো হল রুমে ছিল লাল আলোর ছড়াছড়ি। পরীমনিকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চয়নিকা চৌধুরী, দেবাশীষ বিশ্বাস, অপূর্ব রানা, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, বুলবুল বিশ্বাস, চিত্রনায়ক আমান রেজা, শরীফুল রাজ, সংগীতশিল্পী পূজা প্রমুখ।
গত বছর জন্মদিন ময়ূরের বেশে হাজির হয়েছিলেন পরীমনি। ছিল সবুজ রঙের ছড়াছড়ি। তার আগের বছর সোনালি রঙে নিজেকে সাজিয়েছিলেন নায়িকা। এবার তার নির্ধারিত রং ছিল লাল-সাদা। সাদা শান্তির প্রতীক আর লাল শক্তির প্রতীক। এবারের জন্মদিনে শক্তি আর শান্তির বার্তাই ছড়িয়ে দিয়েছেন পরীমনি।
বিমানবালা বেশে পরীমনি, আসলেন-নাচালেন
তিনি কথা রাখলেন। গত জন্মদিনে মুখ ফসকে বলেছিলেন ‘ককপিট’। এবার তা বাস্তবায়ন করেই ফেললেন। রোববার (২৪ অক্টোবর) ছিল লাস্যময়ী অভিনেত্রী পরীমনির জন্মদিন। রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জন্মদিনের আয়োজন করেছেন তিনি।
জমকালো আয়োজনে এবার জন্মদিন উদযাপন করেছেন পরীমনি। আয়োজন কেন্দ্র সাজিয়েছেন উড়োজাহাজের আদলে। ছিল উড়োজাহাজের আসন, ককপিট। নির্ধারিত সময়ের একটু পর ককপিট থেকে বেরিয়ে আসেন পরীমনি। গানের তালে নাচ করতে করতে বেরিয়ে আসেন তিনি।
লাল-সাদা পোশাকে বিমানবালার সাজ নিয়েছেন পরীমনি। তিনি নেচেছেন এবং নাচিয়েছেন। পরে কেক কেটেছেন তার নানা এবং আত্মীয়দের নিয়ে। কেক খাওয়ার পর্ব শেষ হওয়ার আগে কেক নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন পরীমনি। অতিথিদের অনেকের গালে-গায়ে মাখিয়ে দেন কেক। পুরো আয়োজনে ছিল না উচ্ছ্বাসের কমতি।
এর আগে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে নিজ বাসায় কেক কাটেন পরীমনি। তার নানার আশীর্বাদ নিয়েই এবারের জন্মদিনের আয়োজন শুরু করেন। গতকাল রোববার বিকেলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেন এ নায়িকা। শিশুদের সঙ্গে কেক কাটেন তিনি। এ সময় লাল শাড়িতে দেখা গেছে পরীমনিকে। নিজের ফেসবুকে শিশুদের সঙ্গে কেক কাটার ভিডিও শেয়ার করেছেন নায়িকা নিজেই।