কৃষি খামার

পার্চিং পদ্ধতিতে ফসলের ক্ষতিকর পোকা তাড়ানোর উপায় ২০২২

  1. পার্চিং পদ্ধতিতে ফসলের ক্ষতিকর পোকা তাড়ানোর উপায় ২০২২কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পার্চিং মানে খেতে ডালপালা পুঁতে দেওয়া। ফসলের জমিতে ডাল, কঞ্চি, বাঁশের খুঁটি এগুলো পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে পাখি ক্ষতিকারক পোকার মথ, বাচ্চা, ডিম খেয়ে পোকা দমন করে। মূলত ফিঙে, শালিক, বুলবুলি, শ্যামা, দোয়েল, সাত ভায়রা—এসব পাখি পার্চিংয়ে বসে পোকা ধরে খায়। ফসলের পোকা দমনের এ পদ্ধতি বলতে গেলে ব্যয়বিহীন ও পরিবেশবান্ধব। ফসলের খেতে ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং দুটিই করা যায়। মরা ডালপাল পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং। আর ধঞ্চে, অড়হর—এসব জীবন্ত গাছ জমিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে লাগিয়ে দেওয়া হলো লাইভ পার্চিং। প্রতি শতকে অন্তত একটি বাঁশের আগা, কঞ্চি বা ডাল পুঁততে হয়। ফসল রোপণের পরপরই পার্চিং স্থাপন করতে হয়। ফসলের সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে কমপক্ষে এক ফুট উচ্চতায় পার্চিং করা উচিত বলে তাঁরা জানান।ফলাফলে দেখা গেছে, ফিঙ্গের পাকস্থলীতে ধানের ক্ষতিকর পোকামাকড় ৪৯ ভাগ, উপকারি পোকামাকড় ৩৫ ভাগ ও অন্যান্য (নন রাইস অর্থাৎ ধানের কোন ক্ষতিকর বা উপকারী পোকামাকড় নয়) পোকামাকড় ১৬ ভাগ। একই বিভাগের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ধান গাছের শীর্ষ পাতা (ডিগ পাতা) হতে ১০০ সেন্টিমিটার উঁচু এবং ১০০ বর্গমিটারে একটি ডাল (হেক্টরে ১০০ টি/ বিঘায় ১৬ টি) খুবই কার্ষকরী।

    ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে ধানক্ষেতে গাছ বা বাঁশের ডালপালার পরিবর্তে ধৈঞ্চা গাছ (Live Perching) পার্চিং হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে যা মোটেই বিজ্ঞান সম্মত নহে।

    প্রথমত: একই মৌসুমে ধান গাছের সঙ্গে ধৈঞ্চা গাছ লাগানো হলে উক্ত গাছ পাখি বসার মত উপযোগী হয় না। দ্বিতীয়ত: কোথাও কোথাও ধান কাটার পরে ও ধৈঞ্চা গাছকে নষ্ট না করে কয়েক মৌসুম বাড়তে দেয়া হয় যাতে করে ধৈঞ্চাগাছের ডালপালা বৃদ্ধি পায় এবং পাখি বসার উপযোগী হয়। এমন অবস্থায় ধৈঞ্চা গাছের কিছু পাতা মাটিতে পড়ে অল্প কিছু জৈবসার যুক্ত হলেও এ পদ্ধতি ব্যবহার করা ঠিক নয়।

    কারণ রাজশাহী অঞ্চলের পবা উপজেলায় ব্রি, কর্তৃক এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বর্ধিত ধৈঞ্চা গাছের নিচের ধানক্ষেতে শিষের সংখ্যা শতকরা ৮-৯ ভাগ কমে যায় যা ধানের ফলনের উপর ঋণাত্বক প্রভাব ফেলে।

    এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ধানক্ষেতে পোকা দমনের জন্য তথাকথিত লাইভ পার্চিং (ধৈঞ্চা গাছ) ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ এতে ধৈঞ্চা গাছ উৎপাদনের জন্য কৃষকের বাড়তি খরচের প্রয়োজন হয় এবং ফলন ও কমে যায় যা কোনভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়

    জেলা প্রতিবেদকরংপুর ১২ মে: রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় ফসলের মাঠে দেওয়া হয়েছে পার্চিং ব্যবস্থাপনা। খেতে ক্ষতিকর পোকা খাদক পাখিদের বসার জন্য বিভিন্ন স্থানে আফ্রিকান জাতের ধৈঞ্চা ও গাছের ডালপালা পুঁতে রাখা হয়েছে। এতে ফসলের ক্ষেতে কীটনাশকের বদলে এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সাফল্যের মুখ দেখছে চাষীরা।

    রংপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মিঠাপুকুরে ৩২ হাজার ৬ শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ১০ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ও ২১ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল  জাতের ধান চাষ হয়েছে

  2. জেলা প্রতিবেদকরংপুর ১২ মে: রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় ফসলের মাঠে দেওয়া হয়েছে পার্চিং ব্যবস্থাপনা। খেতে ক্ষতিকর পোকা খাদক পাখিদের বসার জন্য বিভিন্ন স্থানে আফ্রিকান জাতের ধৈঞ্চা ও গাছের ডালপালা পুঁতে রাখা হয়েছে। এতে ফসলের ক্ষেতে কীটনাশকের বদলে এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সাফল্যের মুখ দেখছে চাষীরা।রংপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মিঠাপুকুরে ৩২ হাজার ৬ শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ১০ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ও ২১ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল  জাতের ধান চাষ হয়েছে।উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কীটনাশকের বদলে পার্চিং ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের উপর জোর দেওয়া হয়। চাষীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। সেখানে পার্চিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে ‘পাচিং মিউজিয়াম’।

    পার্চিং মিউজিয়ামের উপকারিতা বিষয়ে ওই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিদুর রহমান জানান, আফ্রিকান ধৈঞ্চাসহ ১৪ ধরনের প্রযুক্তি সমন্বিত করে পার্চিং মিউজিয়াম স্থাপন করা হয়েছে। ধান খেতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা দমনের জন্য গাছের ডালপালা, বাঁশের ঝিক (কঞ্চি) ও আফ্রিকান জাতের ধৈঞ্চা গাছের কাটিং রোপণ করা হয়।

    এসব জায়গায় পাখি বসে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফেলে।
    এলাকার কৃষক বাবলু মিয়া বলেন, আমি এবার ৫০ শতক জমিতে  বোরো চাষ করেছি। পার্চিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জমিতে ধান চাষ করে কোন কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়নি। এতে খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন বেশি হবে।

    কীটনাশক ব্যাবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। এর বদলে পার্চিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জমিতে ধান চাষ করলে একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে তেমনি জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পাব

Razuaman.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *