পুই শাক খাওয়ার উপকারিতা-2022

পুঁই শাকের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অনেক। কারণ পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘বি , ‘সি ও ‘এ` পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ । বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ এই শাকটি একদিকে যেমন বহুবিধ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে,ঠিক অন্যদিকে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

পুঁই শাকের উপকারিতা

পুঁই শাক আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক উপকারি খাদ্য।এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুঁইশাকের পুষ্টি উপাদন অনেক। পুঁইশাক দেহ থেকে সঠিক ভাবে বর্জ্য নিষ্কাশন করে বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটিসহ বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।এইশাকে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ। শরীরের কোনো অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফুলে গেলে এই শাকের শিকড় বেটে লাগালে দ্রুত উপশম হয়।তাছাড়া পুঁই শাকের উপকারিতা আর ও নিচে আলোচনা করা হলো-

পুঁইশাকের অপকারিতা

পুঁইশাকের অপকারিতা কিছু রয়েছে।যাদের এর্লাজির সমস্য রয়েছে তারা বেশি পরিমানে এই শাক খেলে এর্লাজির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।পুঁইশাক অক্সালেটস সমৃদ্ধ, এটি গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের তরল পদার্থে অক্সালেটস এর পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পুঁইশাকে পিউরিন (purines) নামক উপাদান রয়েছে যা অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে শরীরে ইউরিক এসিড (uric acid) বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে গেঁটেবাত,কিডনীতে পাথর ইত্যাদি রোগ হতে পারে। কিডনি এবং পিত্তথলির বিভিন্ন সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের অবশ্যই পুঁইশাক খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

পুঁইশাকের পুষ্টিগুণ

পুঁইশাকের পুষ্টিগুণ প্রচুর রয়েছে। নিয়মিত পুঁইশাক খেলে শরীরের অনেক উপকার হয়। আর পুঁইশাকের পুষ্টি উপাদান নিচে দেওয়া হলো-
পরিবেশন আকার: ১০০ গ্রাম পরিবেষনার ধরন: ৪ কাপ
ক্যালরি: ২৫ কিলোক্যালরি
শর্করা: ২.১ গ্রাম
ফ্যাট: ০.৩ গ্রাম
ভিটামিন সি: ৫১.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ: ১৭০ I.U. (আন্তর্জাতিক একক)
প্রোটিন: ২.৪ গ্রাম
পানি: ৯১.৮ গ্রাম

শুক্রানুর সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে
পুঁইশাক খাওয়ার ফলে শুক্রানুর সক্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড, জিঙ্ক ,আয়রনএবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শুক্রানুকে সুস্থ-সবল রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
পুঁইশাক ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া সহজ করে ক্যালরি ক্ষয় করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মোটা হলে নিয়মিত পুঁইশাক খাওয়া যেতে পারে কারণ এতে ওজন কমানোর উপাদান রয়েছে।

হৃদরোগের ঝুকি কমায়
পুঁইশাকে বিদ্যমান ভিটামিন,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ফলিক এসিড ইত্যাদি পুষ্টিগুণ হৃদপিণ্ডের জন্য খুব উপকারী। এই উপাদানগুলো শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ধমনীতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল জমতে বাঁধা দান করে।গবেষকরা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমাতে পুঁইশাক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ক্যান্সার
জার্নাল অফ ক্যান্সার এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফ্ল্যাভোনয়েডস সমৃদ্ধ পুঁইশাক গ্রহণ করলে নারীদের ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কম হওয়ার সম্ভবনা। এছাড়াও পুঁইশাকে ক্লোরোফিল, ওমেগা-৩ ফ্যাটি আসিড, ক্যারোটিনয়েডস,ভিটামিন,খনিজ লবণ, এবং অ্যান্টিআক্সিডেন্ট রয়েছে। আর এইসব উপাদান টিউমার সংগঠনে বাধা প্রদান করে এবং ক্যান্সার বৃদ্ধিকারী মলিকিউলস কমিয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

চর্মরোগ
পুঁইশাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক কোঁচকানো বা বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এটা আমাদের ত্বকের উপরে বিষাক্ত উপাদান জমতে বাঁধা প্রদান করে এবং ত্বকের টিস্যুগুলোকে মজবুত করে তোলে। আর এই কারণে সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বকে জন্য ডাক্তাররা প্রতিদিন পুঁইশাকের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

One thought on “পুই শাক খাওয়ার উপকারিতা-2022

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *