উচ্চ ঔষধি গুণ সম্পন্ন তরল ‘মধুর’ নানা গুণের কথা প্রায় সকলেরই জানা। তবে আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছেও কি এসব ভেষজ ওষুধের গুরুত্ব আছে? জীবনকে মধুময় করতে মধুর খাদ্য উপাদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকালে মধু খেলে ওজন কমে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিষ্কার থাকে।
শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে মধু। কারণ মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠাণ্ডা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়।
মধুর সঙ্গে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর সমস্যা দূর করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। মধু ও দারচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। মধু পেটের অম্লভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারি খাবার খাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু কিন্তু খুবই উপকারী।
মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। বিশেষ করে যারা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন। শরীরের দুর্বলতা ও চা-কফির নেশা কমায় মধু।
আসুন জেনে নিই প্রতিদিন মধু খাওয়ার উপকারিতা-
১. মধু প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাঝে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার জন্য মধু কাজ করে। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে মধু খেলে চোখের স্বাস্থ্য, পেটের সমস্যা, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাগুলো কমে যায়।
২. মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার, উচ্চরক্তচাপ ও ত্বকজনিত সমস্যা দূর করে। এতে থাকা ফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি আরও রয়েছে অর্গানিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভনয়েড, যা স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৩. মধু শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের সেসুলার ড্যামেজকে কমিয়ে আনে।
৪. প্রতিদিন নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় মধু খেলে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। পরিমিত পরিমাণ মধু রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এ ছাড়া উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
৫. মধুতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। মধু থেকে নিঃসৃত হওয়া হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড অ্যান্টি-মাইক্রবিয়াল হিসেবে কাজ করে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্মে বাধা দেয়। মধু খেলে দাঁতের ব্যথাভাব ও প্রদাহ কমে ও পাকস্থলীও ভালো রাখে।