পর্নস্টার থেকে বলিউড সিনেমার নায়িকা হওয়া আলোচিত অভিনেত্রী সানি লিওন। অবশ্য তার বিরুদ্ধে ভারত থেকে পর্নসাইট চালানোর অভিযোগ রয়েছে। আসলে বলিউড সেনসেশন সানি লিওনকে নিয়ে যেন জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তবে এই সব কাজের বাইরে তার আরও অনেক তথ্য রয়েছে, যা অনেকের কাছে অজানা। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলো-
১. কানাডায় ১৯৮১ সালে জন্মগ্রহণ করেন সানি লিওন।
২. তার পারিবারিক নাম করণজিত কৌর বোহরা হলেও মিডিয়া জগতে তিনি সানি লিওন নামেই পরিচিত।
৩. অভিনেত্রীর উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। আর তার ওজন ৫০ কেজি।
৪. সানি লিওন একজন নার্স হতে চেয়েছিলেন। আর এজন্য তিনি নিয়েছিলেন ট্রেনিংও।
৫. জার্মান বেকারিতে ১৫ বছর বয়স থেকে রোজগার শুরু করেন।
৬. ২০০১ সালে পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের এক চিত্র সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরই তার গ্ল্যামার দুনিয়ায় আসা।
৭. অ্যান্টি বুশ প্রচারের জন্য ২০০৪ সালে নিজের চুল ছেটে ফেলে প্রতিবাদ জানান সানি।
৮. পশুপ্রেমী সানি লিওন পশুদের জন্য তিনি একাধিক উদ্যোগ নিয়ে থাকেন।
৯. সানি যখন প্রথম পর্নগ্রাফি করতে রাজি হন, তখন তার শর্ত ছিল শুধু লেসবিয়ান পর্ন-ই করবেন তিনি।
১০. ২০০৪ সালে ‘দ্য গার্ল নেক্সট ডোর’-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। আর তার জীবনের দ্বিতীয় ছবি ‘ভারচুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন’। ছবিটি করে তিনি এভিএন অ্যাওয়ার্ড জেতেন। পর্নগ্রাফিতে যা অস্কারের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
১১. সানি লিওনের বলিউডে যাত্রা শুরু হয় জিসম-২ দিয়ে। কিন্তু তার বলিউডে ডেব্যু হওয়ার কথা ছিল মোহিত সুরির কলিযুগ ফিল্ম দিয়ে। শেষ পর্যন্ত পারিশ্রমিক নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় সানি ওই ফিল্ম করেননি।
১২. ৪১টি পর্ন ছবিতে অভিনয় করেছেন সানি লিওন। এর পাশাপাশি ৪২টি পর্ন ছবি পরিচালনা করেছেন আলোচিত এই অভিনেত্রী।
সানি লিওন পর্নোগ্রাফিক ফিল্ম
2001 পেন্টহাউস: প্যাটস ইন প্যারাডাইস
2005 আলাবামা জোন্স এবং বুস্টি ক্রুসেড
2005 সানি
2006 ভার্চুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন
2006 সানি এবং চের
2007 দ্য ফিমেল গার্ডেনার
সানি লিওন টিভি ফিল্মস
2001 লিভিন ইট আপ
2005 MTV পুরস্কার
2006 ডেবি ডাউস ডালাস
2007 পকেট পুল
2006 জলদস্যুদের রক্ত
2007 XBIZ
2011 বিগ বস 5
2010 AVN, FAME
সানি লিওন আমেরিকান ফিল্মস
2004 দ্য গার্ল নেক্সট ডোর
2008 জলদস্যুদের রক্ত
2010 সালে তিনি ভার্জিনিটি হিট করেন
সানি লিওন একটি ভারতীয় চলচ্চিত্র
2012 XBIZ
2012 জিসম 2 ইজনা
2013 ওডালা, জ্যাকপটে শ্যুটআউট
2013 AVN
2014 সানি লিওনের সাথে হন্টেড উইকএন্ড
2014 স্প্লিটসভিলা: সিজন 6
2014 রাগিনী এমএমএস 2, হায়ার, হেট স্টোরি,
বলিন্দর সিং 2014
প্রাথমিক জীবন :
লিওন সার্নিয়া, অন্টারিও শহরে শিখ পাঞ্জাবি বাবা-মার ঘরে জন্ম নেন। তাঁর বাবা তিব্বতে জন্মগ্রহণ করেন এবং দিল্লিতে বেড়ে ওঠেন। আর তাঁর মা (২০০৮ সালে মারা যান) ছিলেন সিরমাউর, হিমাচল প্রদেশের মেয়ে। তরুণী থাকাকালীন সময়ে তিনি খুব খেলাধুলা-প্রেমী ছিলেন এবং ছেলেদের সাথে রাস্তায় হকিও খেলতেন।
যেহেতু তাঁর পরিবার শিখ ছিলো, এ কারণে পাবলিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনিরাপদ বোধ করতো তাঁর পরিবার। ১৬ বছর বয়সে অন্য বিদ্যালয়ের একটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের সাথে তিনি কুমারীত্ব হারান এবং ১৮ বছর বয়সে তাঁর উভকামিতা আবিষ্কৃত হয়। ১৩ বছর বয়সে তাঁর পরিবার ফোর্ট গ্রাটিয়ট, মিশিগান চলে আসেন। পরবর্তীতে এক বছর পর লেক ফরেস্ট ক্যালিফর্নিয়ায় স্থানান্তরিত হন ।
কর্মজীবন :
পর্নো শিল্পে কাজ করার পূর্বে, তিনি প্রথমে একটি জার্মান বেকারিতে কাজ করতেন। এরপর জিফি লুবে এবং পরবর্তীতে একটি ট্যাক্স এবং রিটায়ারমেন্ট ফার্মে কাজ করেন। ২০০২ সালে এডাল্ট এন্টারটেনমেন্ট এক্সপোতে তাঁর প্রথমদিকের প্রচারমূলক উপস্থিতি।
অরেঞ্জ কাউন্টিতে পিডিঅ্যাট্রিক নার্স হিসেবে অধ্যয়নকালে জন স্টিভেনসের সাথে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন এক বহিরাগত নৃত্যশিল্পী সহপাঠী। স্টিভেনস যিনি একজন এজেন্ট ছিলেন, পরবর্তীতে পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের আলোকচিত্রী জে অ্যালেনের সাথে লিয়নের পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর প্রাপ্তবয়স্ক কর্মজীবনের জন্য একটি নাম ঠিক করতে, তিনি আসল নাম হিসেবে সানি নামটি উল্লেখ করেন এবং লিয়ন নামটি ঠিক করেন পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের সাবেক মালিকবব গুচ্চিওনে। পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের জন্য পেন্টহাউস পেট অব দ্য মান্থ হিসেবে মার্চ ২০০১ সংখ্যার জন্যে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। পরবর্তীতে হলিডে ফিচারে হাস্টলার হানি হিসেবে হাস্টলার ম্যাগাজিনের ২০০১ সংস্করণে অনেকগুলো ম্যাগাজিনের কাভার গার্ল হবার সুযোগ পান। এর মধ্যে রয়েছে, চেরি, মায়েস্টিকু ম্যাগাজিন, হাই সোসাইটি, শয়ান্ক, এভিএন অনলাইন, লেগ ওয়ার্ল্ড, ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল এবং লোরিডার। এরপর তাঁর অনলাইন ক্রেডিটে মডএফএক্স মডেলে হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন সুসে রান্ডাল, কেন মার্কাস এবং ম্যাক এ্যন্ড বাম্বেল। তিনি সচিত্র ক্রেডিটে আদ্রিয়ানা সেজ, জেনা জেমসন, জেলেনা জেনসেন এবং আরিয়া জিওভান্নি ছাড়াও বিভিন্ন তারকাদের সাথে কাজ করার সুযোগ পান।
২০০৩ সাল সানির ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট শুরু হয়। তিনি নির্বাচিত হন ‘পেন্টহাউস পেট’। এ বছরই পর্ণো ছবির অন্যতম সেরা
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভিড ইন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তিতে আবদ্ধ হন। তবে চুক্তির শর্ত অনুসারে কেবল লেসবিয়ান চরিত্রেই অভিনয় করতে থাকেন তিনি। সানি অভিনীত প্রথম ছবিটি বের হয় ‘সানি’ নামেই ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারেই বের হয় পরের ছবিটিও। নাম ‘ভার্চুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন’। এভাবে কোনো অভিনেত্রীর নামে ছবি প্রকাশের ঘটনা ভিভিডের ইতিহাসে এটাই প্রথম। এখানে তার সঙ্গে আরও অভিনয় করেন মিকালা মেনডেজ এবং ডেইজি ম্যারি। এই ছবিটি তাকে এনে দেয় ‘এভিএন’ সম্মাননা।
ব্রাজিলে রিলিজ হয় ‘সানি ইন ব্রাজিল’এবং ‘দ্য সানি এক্সপেরিমেন্ট’। ছবিগুলো ২০০৭ সালে বাজারে রিলিজ করে ভিভিড।
২০০৭ সালের মার্চ মাসে আবারও সানির সঙ্গে চুক্তি করে ভিভিড। চুক্তির আওতায় ছয়টি ছবিতে অভিনয় করেন সানি লিওন। আর এবারই প্রথম কোনো পুরুষ অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে সম্মতি জানান তিনি। সানির বাগদত্তা ম্যাট এরিকসন এই ছবিতে তার
কো-আর্টিস্টের ভূমিকায় অভিনয় করেন। পুরুষের সঙ্গে প্রথম যে ছবিটিতে তিনি অভিনয় করেন সানি সেটির নাম ‘সানি লাভস ম্যাট’। ছবিটি তাকে ২০০৯ সালের সেরা নারী অভিনেত্রীর পুরষ্কার এনে দেয়। একসঙ্গে কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের পর সানি উপলব্ধি করেন ম্যাটের সঙ্গে টানা অভিনয় বাজারদর কমিয়ে দিচ্ছে। এবার তিনি অন্য অভিনেতাদের সঙ্গেও অভিনয় করতে শুরু করেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন টমি গান, চার্লস ডেরা জেমস ডিন প্রমুখ।
ব্যক্তিগত জীবন:
জুন ২০০৬ সালে, লিয়ন একজন আমেরিকান নাগরিক হয়ে ওঠেন। কিন্তু কানাডায় দ্বৈত নাগরিক হিসেবে থাকার পরিকল্পনা করেন। এপ্রিল ১৪, ২০১২ সালে, লিওন দ্য নিউ ইন্ডয়িান এক্সপ্রেস সাক্ষাত্কারে নিজেকে ভারতের অধিবাসী হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে তিনি ভারতের বৈদেশিক নাগরিক ছিলেন এবং তাঁর বাবা ভারতে বসবাস করতেন, আর তিনি বিদেশী নাগরিকত্ব পাওয়ারও যোগ্য ছিলেন।