মোবাইল সার্ভিস

মোবাইলে চার্জ না থাকার কারণ-razuaman

মোবাইলে চার্জ না থাকার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো ব্যবহারের পর অ্যাপস বন্ধ না করা।

আমরা স্মার্টফোনে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করে থাকি। অনেক সময় দেখা যায় অ্যাপস ব্যবহার করার পর আমরা বন্ধ করতে ভুলে যায়।  ফলে অ্যাপসগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে যা আপনার স্মার্টফোনের চার্জের একটি বড় অংশ ব্যবহার করে। তাই দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যাওয়া এড়াতে কাজ শেষ হওয়ার পর অ্যাপস বন্ধ করে রাখতে হবে।

ফোনে দ্রুত চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার পিছনে ডিসপ্লের ব্রাইটনেস ব্যাপক প্রভাব ফেলে। স্মার্টফোনের চার্জের একটি বড় অংশ এর ডিসপ্লে ব্যবহার করে থাকে। ব্যাটারির দীর্ঘায়ুর সঙ্গে তাপমাত্রার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বেশি তাপে ব্যাটারি কম টেকে। মোবাইল ফোনটি যদি সব সময় বেশি গরম হয়, তখন ফোনটির ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তাই কারণ ছাড়া অযথা ডিসপ্লের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে রাখবেন না। সবসময় চেষ্টা করবেন যেন ডিসপ্লের ব্রাইটনেস কম থাকে। স্মার্টফোনে অটো ব্রাইটনেস নামে যে ফিচারটি রয়েছে সেটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা অটো ব্রাইটনেস ফিচার অন করা থাকলে আপনার স্মার্টফোন চারপাশের আলো অনুযায়ী আপনার ফোনের ব্রাইটনেস এডজাস্ট করে নেয়। অনেক সময় দেখা যায় ফোনের ব্রাইটনেস যেটুকু থাকা প্রয়োজন তার থেকেও বেশি থাকছে যা আপনার ব্যাটারির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ফোনের ব্রাইটনেস সবসময় ম্যানুয়ালি এডজাস্ট করুন।

ফোন অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণেও ফোনের চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যায়। বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলি, দেখুন স্মার্টফোন নানা কারণে গরম হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রধান কারণ হলো প্রসেসর। আপনি যদি ফোনে কম কাজ করেন তাহলে আপনার ফোন কম গরম হবে। খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কিন্তু আপনি যখন আপনার ফোনে একাধিক কাজ একসাথে করবেন তখন আপনার স্মার্টফোনের প্রসেসরকেও বেশি কাজ করতে হবে।

যার ফলে আপনার প্রসেসর গরম হবে, সেইসাথে হিউজ পরিমাণ পাওয়ার আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করবে। তাছাড়া ফোন গরম হওয়ার সাথে সাথে আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পাবে। কারণ তাপমাত্রার সাথে ফোনের ব্যাটারির কর্মক্ষমতার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই স্মার্টফোনর চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যায়।

এই অ্যাপগুলো যখন নোটিফিকেশন পাঠায় তখন অটোমেটিক ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু হয়ে যায় যা ফোনের চার্জ দ্রত শেষ হতে সাহায্য করে থাকে। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য আপনি অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখতে পারেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কোন অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ না করায় ভালো।

ইন্টারনেট, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস এবং অটো সিংক (Sync) যদি সবসময় চালু থাকে তাহলে এগুলো ব্যাটারির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি এই সার্ভিসগুলো তখনই ব্যবহার করুন যখন আপনার প্রয়োজন। প্রয়োজন ছাড়া এগুলো অযথা চালু রাখবেন না। তাহলেই আপনার স্মার্টফোনের চার্জ বেশিক্ষণ থাকবে।

মানুষের উপর যেমন তাপমাত্রার প্রভাব রয়েছে ঠিক তেমনি স্মার্টফোনর ব্যাটারির উপরেও তাপমাত্রার প্রভাব রয়েছে।
তাপমাত্রা কম-বেশি হলে তা ব্যাটারির কর্মক্ষমতা উপর প্রভাব ফেলে। সাধারণত স্মার্টফোনগুলো ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ভালোভাবে কাজ করতে পারে। আমাদের দেশে তাপমাত্রা শীতকালে এতো কম না হলেও গ্রীষ্মকালে এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে যায়। ফলে স্মার্টফোনের ব্যাটারির কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়।

আপনার স্মার্টফোন যদি পুরনো হয়ে যায় তাহলে ব্যাটারির কার্যক্ষমতা কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। সাধারণত একটি ব্যাটারির গড় আয়ু ধরা হয় ১-২ বছর। এই টাইমের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যাটারির কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু ফোনের ব্যাটারির বয়স ২ বছরের বেশি হলে এর কার্যক্ষমতা অনেকটাই হ্রাস পেয়ে যায়, তখন এটি চেঞ্জ কারাই বেটার।

এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে ফোনে একসাথে একাধিক কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং স্মার্টফোন যেন অতিরিক্ত গরম না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। দুর্বল নেটওয়ার্ক সিগনাল হলো ফোনে চার্জ কম থাকার অন্যতম একটি কারণ। অনেক সময় দেখা যায় কোন জায়গায় নেটওয়ার্ক সিগনাল খুবই দুর্বল।

একইভাবে আপনার ওয়াইফাই সিগনালও যদি দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে সেটি আপনার ব্যাটারির কার্যকারিতা উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর কারণ হলো আপনার ফোনে যখন দুর্বল নেটওয়ার্ক সিগনাল আসে তখন ফোনে থাকা নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনা ভালো সিগনাল পাওয়ার জন্য বেশি শক্তি খরচ করে।

যার ফলে ফোনের চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ভালো নেটওয়ার্ক সিগনাল নিশ্চিত করা। স্মার্টফোনে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ নোটিফিকেশন পাঠিয়ে থাকে। অনেক অ্যাপ আবার নির্দিষ্ট সময় পর পর সার্ভার থেকে নতুন তথ্য সংগ্রহ করে ‘পুশ’ নোটিফিকেশন সেন্ড করে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button